ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০২৫: স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠনের দাবিতে গত ১৪ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন দেশের সকল ইউনানি-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও তাদের পেশাজীবী সংগঠনগুলো। আন্দোলনের কারণে গত ১৪ দিন ধরে মিরপুর-১৩ নম্বরে অবস্থিত ক্যাম্পাসটির ক্লাস ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে।
আজ ১৫ জুলাই, ২০২৫ তারিখে রাজধানীর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন তিনটি মেডিকেল কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী কলেজগুলো হলো—সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ, রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ (লক্ষ্মীপুর), এবং হামদর্দ ইউনানি মেডিকেল কলেজ (বগুড়া)।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি, অবিলম্বে স্বতন্ত্র ইউনানি-আয়ুর্বেদিক কাউন্সিল গঠন করা। তারা জানান, গত ৩৫ বছর ধরে আইন ছাড়া অনেকটা টানাপোড়েনের মধ্যে চলছে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ে বারবার জানানো সত্ত্বেও তাদের দাবির প্রতি কোনো কর্ণপাত করা হয়নি। ১৯৯৬ সালের নীতিমালা অনুসারে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)-এর আদলে পৃথক কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
এদিকে, ৩৬তম ব্যাচে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সরকারিভাবে চলার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধার কারণে গতকাল রোববার (১৩ জুলাই) পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেননি। প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ইউনানি বিভাগে ২৫ জন ও আয়ুর্বেদিক বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। আজ সোমবার, ১৫ জুলাই, ইউনানি-আয়ুর্বেদিক কলেজে ভর্তির শেষ তারিখ। চলমান অচলাবস্থার কারণে শূন্য আসন রেখেই ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হতে চলেছে, কারণ আন্দোলনের কারণে আজও কেউ ভর্তি হতে পারবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্দোলনরত মেডিকেল শিক্ষার্থীরা দৃঢ়ভাবে বলছেন, স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা আর কোনো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে দেবেন না। বর্তমান শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় তারা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ভর্তি কার্যক্রমের নতুন সময়সূচি ঘোষণা হলেও ক্যাম্পাসে অবস্থান করে তা প্রতিহত করার কর্মসূচি অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনরত মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

